ঢাকা আশুলিয়ায় ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপার।
স্টাফ রিপোটারঃ আসিফুজ্জাম আসিফ
ঢাকার আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক। দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই মহাসড়কে একটি ফুটওভার ব্রিজের অভাবে প্রতিদিন মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
ঝুঁকির তালিকায় আছে দুটি স্কুলের কমপক্ষে ৭ শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীও। এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে নানা দুশ্চিন্তায় থাকছেন।
বাসস্ট্যান্ডটি সড়ক পারাপারের জন্য একটি বিপদজনক স্থান হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর সরঞ্জামাদী আনা হলেও কর্তৃপক্ষ ফুটওভার ব্রিজটি নির্মাণ করছেন না। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন। ফলে পথচারীসহ স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (২৯ মে) নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার কবিরপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির এক পাশে কবিরপুর অঞ্জনা মডেল হাই স্কুল ও কবিরপুর রেডিও কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অন্য পাশে মিল কারখানা, বাজারসহ নানা প্রতিষ্ঠান।
নিত্য প্রয়োজনে প্রতিদিন সড়ক পারাপার হন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পোশাক শ্রমিকসহ নানা শ্রেণী পেশার হাজারো মানুষ। সড়ক বিভাজক, ট্রাফিক সিগন্যালসহ কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পারাপার হতে হয় তাদের।
স্কুল ছুটির আগে স্কুলের কর্মচারীরা সড়কের দুইপাশে গিয়ে গাড়ি থামালে তারপর সড়ক পার হয় শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থায় দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষার্থীদের পরিবার।
স্থানীয়রা বলছেন, এর আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাভার ও আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করে দিলেও গুরুত্ব বিবেচনায় কবিরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওভারব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই।
কয়েক মাস যাবদ ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের জন্য সরঞ্জাম আনা হলেও সড়কের পাশে পড়ে তা নষ্ট হচ্ছে। কবে নাগাদ নির্মাণকাজ শুরু হবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কেউ।
কবিরপুর অঞ্জনা মডেল হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ইয়াসিন আরাফাত বলেন, প্রতিদিন আমাদের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হতে হয়। অনেক সময় গাড়ির চাপ বেশি থাকলে ক্লাসে যেতে দেরি হয়। আমাদের মত শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপারের সুবিধার্থে দ্রুত একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হোক।
কবিরপুর বাজারের মুদি দোকানি ফারুক মিয়া বলেন, তিন বছর ধরে দোকান করছি। এই তিন বছরে অনেক দুর্ঘটনা দেখেছি। শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আহত হয়েছে। অনেকে মারাও গেছেন। যদি ব্রিজ থাকতো তাহলে এমন অঘটন ঘটতো না।
শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, এখানে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেশ কয়েকটি কিন্ডারগার্টেনসহ শিল্পকারখানা রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষের যাতায়াত।
অনেকটা অনিরাপদ পরিস্থিতিতে তারা ব্যস্ততম এ মহাসড়কটি পার হয়। অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এসকল মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের তদারকিতে ফুটওভার ব্রিজের প্রস্তাবনা পাশ হয়।
আমার জানামতে ইতোমধ্যে ব্রিজের সরঞ্জাম আনাও হয়েছে। তবে কাজ কেনো বন্ধ রয়েছে তা আমার জানা নেই। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কটি সড়ক ও জনপদের মানিকগঞ্জ বিভাগীয় শাখার অন্তর্গত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সওজের মানিকগঞ্জ বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা বিভাগীয়ভাবে কিছু সরঞ্জাম সেখানে নিয়ে রেখেছি। কিন্তু এখনও দরপত্র আহবান প্রক্রিয়াধীন আছে।
তিনি বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হলে, ফান্ডের কনফার্মেশন পেলে আমরা টেন্ডার করে দিব।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ধন্যবাদ আপনাকে স্যার